পৃথিবীর তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল, তাই সাঁতার জানাটা বেশ জরুরী। একজন ভালো সাঁতারে একজন ভালো অভিযাত্রী হতে পারে। অভিযানের যেকোনো পর্যায়ে হটাৎ বিপদ বলে-কয়ে আসেনা। সাঁতার না জানা থাকলে একহাঁটু জল ও ভয়ানক বিপদের কারণ হতে পারে। আমি আমার দাদুর কল্যানে খুব ছোট বেলায় সাঁতার শিখে নিয়েছিলাম। প্রায় ৬বছর বয়সেই আমি আমার মামাবাড়ির সংলগ্ন বিরাট পুকুরে সাঁতার এ পারদর্শী হয়ে উঠেছিলাম। বয়স বাড়ার সাথে সাথে গ্রামের তারাজলী খাল বা ছোট নদী হয়ে উঠেছিল দুপুরের জল-খেলার গন্তব্য। পরে যখন কালোরা তে নিজের বাড়ি এলাম তখনও বাড়ির পাশেই কংসাবতী নদী হয়ে উঠেছিল শৈশবের waterpark . যেহেতু আমি গ্রামেই বোরো হয়েছি তাই বেলা বাড়লেই সব পাড়ার ছেলেরা (দাদা---ভাই-রা ) মিলে নদীতে ঝাঁপায় ঝুড়তাম। মা কাঁচা কঞ্চি নিয়ে নদী ঘাটে না পৌঁছানো পর্যন্ত খেয়াল ই থাকতো না কখন বেলা গড়িয়ে বিকেল হয়ে যেত। প্রবল বেগে প্রবাহিত কংসাবতী আমাকে শিখিয়েছে - “যে সাঁতার জানে, সে জানে বেঁচে থাকার মানে — ভেসে থাকা নয়, চলতে থাকা।”
আস্তে আস্তে বড়ো হয়ে বাইরে গেলাম পড়তে , তখন দুপুরে স্রান করার সময় খুব মিস করতাম কংসাবতী কে। মালদা তে থাকার সময় ও বিভিন্ন পুকুর আর একবার গঙ্গাতে সাঁতার কেটেছিলাম। মালদার মানিকচক এর বিশাল গঙ্গা এর রূপ আমাকে মুগ্ধ করতো কিন্তু কি যেন একটা অজানা ভয়ে একা জলে ঝাঁপায় ঝোড়ার সাহস পেতাম না। পরে কলকাতায় যখন থাকতাম কর্মসূত্রে তখন ও দক্ষিনেশ্বরের গঙ্গায়, দমদমের রাজবাড়ীর পুকুরে মাঝেমধ্যে সাঁতার এর আবেগঘন মুহূর্ত ঝালিয়ে নিতাম।
কোথাও বেড়াতে গেলে যদি কোনো লেক বা বিরাট প্রাকৃতিক জলাশয় পাই তো আজও আমার মনটা একবার ধাকাস করে উঠে আর মনের গভীরে ঘুমিয়ে থাকা সেই দস্যিপনা আবারও জেগে উঠে. তখন খুঁজি হাতের কাছে কোনো পার্টনার যাকে সঙ্গী করে নিশ্চিন্তে নেমে পড়া যাই অথল জলে। সেই একটা কথার কথা আছে " যে আমার জন্য এক গোড়ালি জলে নামে ,আমি তার জন্য একগলা জলে নামতে প্রস্তুত ".
কর্মসূত্রে বাঁকুড়াতে থাকার সময় মিঃ দেবজিৎ বোস (WBCS) স্যার এর অনুপ্রেরণারায় আমি , আর.টিও. ও. স্যার , DMDC স্যার , অয়ন আর কৌশিক মিলে আমরা ভর্তি হয়েছিলাম "বাঁকুড়া সন্তরণ ক্লাব" এ , এবং শিখেছি কিছু বিশেষ কৌশল। আমি জানতাম বাংলা সাঁতার কিন্তু শিখলাম অনেক ম্যাজিক্যাল ব্যাপার -স্যাপার। সেই ছোটবেলার ইচ্ছেগুলো যেন একটা সাজানো ক্লাসরুম পেলো। দেড় -থেকে দু বছর প্রাকটিসের পরে এমন এক জঙ্গলে পোস্টিং পেলাম যে গোটা জেলাতে কোনো সুইমিং পুল ই নেই, ভরসা সুবর্ণরেখা আর সেই ছোটবেলার দুরন্ত কাঁসাই।
আজ পর্যন্ত যতদূর মনে পরে তাতে উল্লেখ্য কয়েকটি বেশ মজাদার সাঁতার অভিযান
Write a comments